মহেশখালী প্রতিনিধি :: কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ীর যুবলীগ নেতা হেলাল উদ্দিন হত্যা মামলায় মূল আসামিদের বাদ দেয়ায় নারাজি দিয়েছেন মামলার বাদী নিহতের স্ত্রী শারমিন আক্তার। গত ১০ অক্টোবর মহেশখালী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দাখিলকৃত চার্জশিটের প্রতি নারাজি দিয়ে তিনি অধিকতর তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। গত ১৮ সেপ্টেম্বর আদালতে জমা দেয়া চার্জশিটে মূল ৮ আসামি ও সাক্ষীদের বাদ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন শারমিন আক্তার। এ ঘটনায় মাতারবাড়ীতে চলছে সমালোচনার ঝড়।
জানা যায়, যুবলীগ নেতা হেলাল উদ্দিন হত্যার মামলায় মাতারবাড়ী ইউনিয়নের সিকদার পাড়ার মৃত শামশুল হুদার পুত্র আব্বাস উদ্দিনকে ১নং, বদর উদ্দিনকে ২নং আসামি। এতে মোট ২২ জনকে আসামি করা হয়। সিকদারপাড়ার মৃত আক্কাস আলীর পুত্র ও স্থানীয় যুবলীগ নেতা হেলাল উদ্দিন গেল ৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় নতুন বাজারস্থ মোর্শেদের চা দোকানের সামনে সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ জানুয়ারি তার মৃত্যু ঘটে। এ ঘটনায় হেলালের স্ত্রী শারমিন আক্তার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় আসামিদের মধ্যে আব্বাস উদ্দিন, বদর উদ্দিন, বারেক হোসেন ও মোহাম্মদ ইমরান উচ্চ আদালত থেকে গত ১১ ফেব্রুয়ারি ৪ সপ্তাহের আগাম জামিন নিয়ে এলাকায় ফিরলেও উচ্চ আদালতের আদেশ অবজ্ঞা করে নিম্ন আদালত থেকে জামিন না নিয়ে পলাতক থাকে। এ অবস্থায় তারা জামিন নেয়ার পর থেকে মামলাটি প্রত্যাহার করে নিতে বাদীকে বারবার হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল। যার কারণে বাদী শারমিন আক্তার সমপ্রতি মহেশখালী থানায় একটি জিডিও দায়ের করেছেন।
এ অবস্থায় মামলার তদন্তকারী অফিসার মাতারবাড়ী পুলিশ ক্যাম্পের আই.সি আনিস উদ্দিন মূল আসামি যথাক্রমে আব্বাস উদ্দিন, বদর উদ্দিন, মোঃ আরমান, মোঃ এমরান, কামাল উদ্দিন, মোঃ শাকিল, মোঃ করিম ও নুরুন্নাহারকে বাদ দিয়ে বাকি ১৪ জনকে রেখে গত ১৮ সেপ্টেম্বর আদালতে চার্জশিট জমা দেন। নিহতের স্ত্রী এ খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। সেই সাথে মহেশখালীতে পুলিশের বিরুদ্ধে চলছে সমালোচনার ঝড়। শারমিন আক্তারের অভিযোগ- ‘মামলার তদন্তকারী অফিসার আনিস উদ্দিন আসামিদের কাছ থেকে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে তার দেয়া সাক্ষী মাতারবাড়ী নতুন বাজারের ব্যবসায়ী ও মালিক সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি মুজিবুল হক মুজিবসহ বাজারে সরজমিনে থাকা বেশ কয়েকজন সাক্ষীর নাম চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত না করে আসামিদের আত্মীয়-স্বজনকে সাক্ষী হিসেবে দেখিয়ে একটি সাজানো চার্জশিট তৈরি করে তা আদালতে দাখিল করে একটি হত্যা মামলার মেরিট নষ্ট করেছেন।’ তিনি তার স্বামী হত্যার ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে মামলাটি পুনঃতদন্তের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আনিস উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আসামি বাদ গেছে এটা সত্য, তবে এ মুহূর্তে আমার হাতে চার্জশিট না থাকায় ক’জন বাদ গেছে তা বলতে পারব না। তাছাড়া এটা আদালতের বিষয় বিধায় এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারব না।’ ‘বাদী যেহেতু নারাজি দিলেন, তাই বাদীর কাছ থেকে জেনে নেন’ বলে তিনি মোবাইলের লাইন কেটে দেন।
পাঠকের মতামত: